কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন কোর্স

  • মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ড
  • মাইক্রোসফট অফিস এক্সেল
  • মাইক্রোসফট অফিস একসিস
  • মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট
  • মাইক্রোসফট পাবলিশিয়ার
  • ইন্টারনেট ব্রাউজিং

মাইক্রোসফট অফিস একটি অফিস স্যুট, যেটি ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন, মাইক্রোসফট উইন্ডোজ সার্ভার এবং পরিষেবা এবং ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমের একটি অফিস স্যুট। এটির প্রথম ঘোষণা দেন বিল গেটস, ১লা আগস্ট, ১৯৮৮ সালে লাস ভেগাসে। প্রথমে এটি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট এক্সেল ও মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট এর একটি সম্মিলিত বান্ডল হিসাবে ছিল।

১০ জুলাই, ২০১২ সালে সফটপিডিয়া বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারির সংখ্যা ১০০ কোটি বলে উল্লেখ করে।[৫]

বর্তমানে চালু মাইক্রোসফট অফিস ২০১৩ উইন্ডোজের জন্য মুক্ত করা হয় ১১ অক্টোবর, ২০১২ সালে,[৬] এবং ম্যাক ওএস এর জন্য মাইক্রোসফট অফিস ২০১১ মুক্ত করা হয় ২৬ অক্টোবর, ২০১২ সালে।[৭] এটির মোবাইল সংস্করণ অফিস মোবাইল নামে উইন্ডোজ ফোন, আইওএস (আইফোন ও আইপ্যাড-এর জন্য আলাদা) এবং এনড্রয়েড ফোনের জন্য বিনামুল্যে চালু আছে। ওয়েব ভিত্তিক অফিস অনলাইন-ও চালু আছে[৮]

উইন্ডোজ এবং ম্যাক ওএস এর বর্তমান ডেস্কটপ সংস্করণের জন্য অফিস ২০১৬, যা ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫[৯] এবং ৯ই জুলাই, ২০১৫[১০] সালে মুক্তি পেয়েছে।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (ইংরেজি: Microsoft Word)

মাইক্রোসফট কর্তৃক তৈরি করা একটি ওয়ার্ড প্রসেসর। এটি ১৯৮৩ সালে জেনিক্স সিস্টেমের জন্য মাল্টি-টুল ওয়ার্ড নামে বাজারে ছাড়া হয়।[৩][৪][৫] পরবর্তীকালে আইবিএমসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মের জন্য যেমন, ডস, (১৯৮৩) অ্যাপল ম্যাকিন্টশ-এর ম্যাক ওএস (১৯৮৫), এটিএন্ডটি ইউনিক্স পিসি (১৯৮৫) ইত্যাদি এবং মাইক্রোসফট উইন্ডোজ (১৯৮৯)। বাণিজ্যিকভাবে স্বতন্ত্র পণ্য বা মাইক্রোসফট অফিস এর সঙ্গে মুক্তি পায়। সীমিত বৈশিষ্ট্য নিয়ে অফিস ভিউয়ার এবং অফিস অনলাইন চালু আছে।

শুরু ও উন্নতি

মাইক্রোসফট মাল্টি-টুল ওয়ার্ড -এর ঘোষণা দেয় জেনিক্স[৬] এবং এমএস-ডস এর জন্য ১৯৮৩ সালে।[৭] শীঘ্রই এর নাম পরিবর্তন করে করা হয় মাইক্রোসফট ওয়ার্ড।[৩] একই বছরে মাইক্রোসফট উইন্ডোজের জন্য ওয়ার্ড চালু করে।মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড – ওয়ার্ড 1.0 – এর প্রথম সংস্করণটি ১৯৮৩ সালের অক্টোবরে চালু হয়েছিল এবং প্রাক্তন জেরক্স প্রোগ্রামারস, চার্লস সিমোনি এবং রিচার্ড ব্রোডি দ্বারা বিকাশ করা হয়েছিল। দু’জনকে ১৯৮১ সালে মাইক্রোসফ্টের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং পল অ্যালেন ভাড়া করেছিলেন। এই সময়ে ওয়ার্ডকে মাল্টি-টুল ওয়ার্ড বলা হত। এটি ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম চালিত কম্পিউটারগুলিতে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়ে
ছিল।


প্রোগ্রাম। এর অর্থ হ’ল স্ক্রিনে থাকা কোনও দস্তাবেজটি কীভাবে এটি একবার মুদ্রিত হবে। শব্দ ব্যবহারকারীদের পাঠ্য নথি তৈরি করতে, সংরক্ষণ করতে এবং মুদ্রণ করতে দেয়, তবে এটি তাত্ক্ষণিক সাফল্য নয়; সম্ভবত এটি বিশাল জনপ্রিয় ওয়ার্ড পার্ফেক্ট এবং ওয়ার্ডস্টার ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রামগুলির সাথে প্রতিযোগিতা করছিল।

বানান চেক এবং শব্দ গণনা সহ যুক্ত বৈশিষ্ট্য সহ ১৯৮৫ সালে সংস্করণ 2.0 প্রকাশিত হয়েছিল।

পরের বছরগুলিতে, মাইক্রোসফ্ট প্রোগ্রামটি বেশ কয়েকবার পুনরায় কোড করেছে যাতে এটি ডস (ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম) এবং ম্যাকিনটোস সহ বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমে কাজ করতে পারে। নামটিও সংক্ষিপ্ত এবং আরও স্মরণীয় করতে ‘ওয়ার্ড’ করে দেওয়া হয়েছিল।

১৯৯৩ সালে মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড 6.0 প্রকাশ করেছিল যা ম্যাকিনটোস, উইন্ডোজ এবং ডসগুলিতে কাজ করে। ওয়ার্ড 6.0 হ’ল ডসটিতে চালানোর জন্য তৈরি করা সর্বশেষ সংস্করণ এবং সংস্করণ নম্বর দ্বারা চিহ্নিত করা সর্বশেষ সংস্করণ; পরবর্তী সংস্করণগুলি তাদের মুক্তির বছরের পরে নামকরণ করা হয়েছিল।

তার পর থেকে মাইক্রোসফ্ট কমপক্ষে প্রতি দুই বছর অন্তর ওয়ার্ডের একটি নতুন সংস্করণ প্রকাশ করেছে। অফিসের 365 অংশের সাথে ওয়ার্ড 2019 সহ সর্বাধিক সাম্প্রতিক প্রকাশটি ২০১৮ এর শেষে ছিল।[৮]

মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ডের ভবিষ্যত

আজ, ওয়ার্ড এবং পুরো অফিস স্যুটটি অত্যন্ত সংহত হয়েছে এবং ওএস এক্স, অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস, পাশাপাশি উইন্ডোতে চলছে। মাইক্রোসফ্টের সিইও সত্য নাদেলা বলেছেন যে অফিস হ’ল সংস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এপিআই (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস)।

সফ্টওয়্যারটির সর্বশেষতম সংস্করণটি ওয়ার্ড 2019 its এর স্প্রেডশিট সমকক্ষের মতো, এক্সেল, ওয়ার্ডকে তার কার্যকারিতাটি উন্নত করতে এবং পরিবর্তিত কম্পিউটিং সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে রাখার জন্য একাধিক হালনাগাদ দেওয়া হয়েছে।

মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ডের সাম্প্রতিক নতুন বৈশিষ্ট্যগুলি

অনুবাদক – শব্দ এখন মাইক্রোসফ্ট অনুবাদক সরঞ্জাম ব্যবহার করে শব্দ এবং বাক্যগুলি অন্য ভাষায় অনুবাদ করতে পারে, যা পর্যালোচনা ট্যাবের অধীনে বসে। এই ফাংশনটি এক্সেল, ওয়াননোট এবং পাওয়ারপয়েন্টেও যুক্ত করা হয়েছে।

শেখার সরঞ্জাম – এই বৈশিষ্ট্যটি আপনার দস্তাবেজগুলি বোঝা সহজ করে তোলে এবং পড়ার সাবলীলতায় সহায়তা করে। উন্নত ফোকাস, পৃষ্ঠার রঙের জন্য কলামের প্রস্থ পরিবর্তন করতে এটি ব্যবহার করুন যাতে পৃষ্ঠাটি কম চোখের স্ট্রেন দিয়ে স্ক্যান করা যায় এবং শব্দের স্বীকৃতি এবং উচ্চারণ উন্নত করতে সিলেবলের মধ্যে বিরতি প্রদর্শন করা যায়। আপনি আপনার ডকুমেন্টটি উচ্চস্বরে পড়তে এই সরঞ্জামটিও ব্যবহার করতে পারেন।

ডিজিটাল পেন – আপনার যদি কোনও টাচ-সক্ষম ডিভাইস থাকে তবে ওয়ার্ডের সর্বশেষতম সংস্করণ (এবং অন্যান্য অফিস পণ্যগুলি) আপনাকে সহজেই টিকিয়ে দেওয়া এবং নোট-তোলার জন্য আঙুল, একটি মাউস বা ডিজিটাল কলম দিয়ে আঁকতে দেয়।

আইকনস এবং এসভিজি (স্কেলেবল ভেক্টর গ্রাফিক্স) – ওয়ার্ডে এখন আইকন এবং 3 ডি চিত্রের একটি গ্রন্থাগার রয়েছে যা তাদের আরও দৃষ্টি আকর্ষণীয় করে তুলতে এবং প্রভাবিত করতে ডকুমেন্টগুলিতে সন্নিবেশ করা যেতে পারে। ব্যবহারকারীরা রঙ পরিবর্তন করতে এবং প্রভাব প্রয়োগ করতে পারেন।
উইন্ডোজের জন্য ওয়ার্ড

মাইক্রোসফট থেকে উইন্ডোজ এবং ম্যাক ওএস-এর জন্য একটি সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্যযুক্ত ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম। স্বতন্ত্র বা মাইক্রোসফট অফিসের সঙ্গে পাওয়া যায়, ওয়ার্ড প্রাথমিক ডেস্কটপ পাবলিশিং ক্ষমতা আছে এবং বাজারে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার। ওয়ার্ড ৯৫ হচ্ছে উইন্ডোজের প্রথম ৩২ বিট ভার্সন অফিস ৯৫ এবং উইন্ডোজ ৯৫ একসাথে মুক্তি পায়। এটি মূলত ওয়ার্ড ৬.০ এবং কয়েকটি নতুন বৈশিষ্ট্যসহ যার মধ্যে আছে বানান-পরীক্ষণ।[৯] ওয়ার্ড ৯৫ থেকে শুরু, পরবর্তী সকল সংস্করণে নাম্বারের পরিবর্তে সাল দিয়ে বাজারজাত করা হয়।[১০]
ম্যাকের জন্য ওয়ার্ড

১৯৯৭ সালে মাইক্রোসফট মাক-এর জন্য আলাদা বিভাগ খোলে, যার উদ্দেশ্য ছিল ম্যাক ওএস-এর জন্য সফটওয়্যার তৈরি। ম্যাকের জন্য প্রথম ওয়ার্ড তৈরি হয়, ওয়ার্ড ৯৮ নামে মাকিন্টোশ সংস্করণ। যেটি ওয়ার্ড ৯৭ কম্প্যাটিবল [১১] এবং এটিতে উইন্ডোজের ওয়ার্ড ৯৭ -এর বানান-পরীক্ষণসহ অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যুক্ত ছিল[১২]
পাসওয়ার্ড সুরক্ষা

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড-এ তিন ধরনের পাসওয়ার্ড সুবিধা আছে

  • ডকুমেন্ট খোলার জন্য পাসওয়ার্ড[১৩]
  • ডকুমেন্ট পরিবর্তনের জন্য পাসওয়ার্ড[১৩]
  • ডকুমেন্ট বিন্যাস এবং সম্পাদনার পাসওয়ার্ড[১৪

মাইক্রোসফট এক্সিস

হচ্ছে মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের একটি জনপ্রিয় ইলেক্ট্রনিক ডাটাবেজ প্রােগ্রাম। ১৯৯৩ সলের প্রথম দিকে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন এই সফটওয়্যারটি বাজারজাত করার অল্প দিনের মধ্যে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক্সিস উইন্ডােজ ভিত্তিক একটি রিলেশনাল ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (Relational Database Management System বা RDBMS) যার সাহায্যে ডাটাবেজের বিভিন্ন টেবিল তৈরি করে ডাটা এন্ট্রির জন্য সহজবােধ্য ও আকর্ষণীয় ফর্ম ডিজাইন করা যায়। তথ্য বাছাই করার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অর্থাৎ এক বা একাধিক টেবিলে সংরক্ষিত লক্ষ লক্ষ ডাটার মধ্য থেকে শুধুমাত্র প্রয়ােজনীয় ডাটাগুলােকে নিয়ে ইচ্ছামতাে মতো বিন্যস্ত করে চূড়ান্ত রিপাের্ট তৈরি করা যায়। এমনকি ডাটার বিন্দুমাত্র ক্ষতি সাধন না করে বিভিন্ন প্রােগ্রামের ফাইল সমুহের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করা যায়। অর্থাৎ বিপুল পরিমাণ তথ্যকে বিভিন্ন ভাবে প্রক্রিয়াকরণ করার জন্য এক্সিস একটি উল্লেখযােগ্য সফটওয়্যার।

মাইক্রোসফট এক্সেল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

মাইক্রোসফট এক্সেল (ইংরেজিMicrosoft Excelমাইক্রোসফটের উন্নয়ন করা একটি স্প্রেডশিট প্রোগ্রাম, যেটার ম্যাকওএসউইন্ডোজ এবং মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ রয়েছে। সফটওয়্যারটি বিশাল একটি ব্যবহারকারী ভিত রয়েছে। এক্সেলে হিসাব-নিকাশ, চিত্রায়নের হাতিয়ার, পিভট টেবিল, ম্যাক্রো প্রোগ্রামিং ভাষাসহ বেশ অনেক সুবিধা রয়েছে। এক্সেল সবগুলো প্ল্যাটফর্মেই বিস্তৃতভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, বিশেষ করে ১৯৯৩ সালে ৫ম সংস্করণ থেকে এক্সেল তৎকালীন ইন্ডাস্ট্রি প্রামাণিক লোটাস ১-২-৩ এর জায়গা দখল করে নেয়। এক্সেল মাইক্রোসফটের অফিস স্যুটের অংশ।

 

মাইক্রোসফট এক্সেল হচ্ছে একটি স্প্রেডশিট অ্যানালাইসিস প্রোগ্রাম। আক্ষরিক অর্থে “স্প্রেডশিট” হলো ছককাটা বড় মাপের কাগজ, যেখানে হিসেবাদির কাজ সম্পন্ন হয়। কাগজের স্প্রেডশিটের ঠিক অনুরূপ হচ্ছে মাইক্রোসফট এক্সেল। বিশেষ কিছু কারিগরি দক্ষতা জানা থাকলে এই প্রোগ্রাম সহজেই ব্যবহার করা যায়। ব্যবসায়িক কাজ ছাড়াও শিক্ষা ও দাপ্তরিক কাজেও এর ব্যবহারের গুরুত্ব আছে।

প্রাথমিক ক্রিয়াপ্রণালী

মাইক্রোসফট এক্সেলে অন্যসব স্প্রেডশিটের সমস্ত প্রাথমিক বৈশিষ্ট্যসমূহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে,[৩] যেমন সেলের গ্রিড ব্যবহার করা, যেখানে রোগুলো সংখ্যাক্রমে সাজানো এবং কলামগুলো অক্ষরের ভিত্তিতে। বিভিন্ন পরিসংখ্যানিক, প্রকৌশলগত এবং অর্থায়ন সম্পর্কিত প্রয়োজন মেটাতে এক্সেলের নিজস্ব একসারী ফাংশন রয়েছে। এবং তার সাথে, এক্সেল লাইন গ্রাফ, হিস্টোগ্রাম, এবং চার্টের মাধ্যমে ডাটা প্রদর্শনের ক্ষমতা রাখে। [৪] এটার নিজস্ব একটি প্রোগ্রামিং দিকও রয়েছে, যেখানে “ভিজুয়াল বেসিক ফর অ্যাপলিকেশন” ব্যবহার করে ব্যবহারকারী বিস্তৃতরকমের সংখ্যাসূচক পদ্ধতি ব্যবহার করতে সক্ষম হয়, উদাহরণস্বরূপ ন্যূনতম প্রভেদসংক্রান্ত গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানের সমস্যা সমাধান করে,[৫][৬] এবং তারপর ফলাফলটা স্প্রেডশিটে প্রতিবেদন হিশেবে প্রকাশের জন্য ভিজুয়াল বেসিকে পুরো প্রক্রিয়াটা স্বয়ংক্রীয়করণ করা সম্ভব। এক্সেলের মিথষ্ক্রিয় বৈশিষ্ট্যও রয়েছে কিছু, যেখানে স্প্রেডশিটকে ব্যবহারকারী থেকে পরিপূর্ণভাবে লুকিয়ে তার সামনে একটি আালাদা ব্যবহারকারী ইন্টারফেস হিশেবে উপস্থাপন করা যায়, যেখানে স্প্রেডশিটটিকেই একটি আলাদা তথাকথিত “অ্যাপলিকেশন” বা “ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেম” হিশেবে উপস্থাপন করা হয়, যেমন স্টক অ্যানালাইজার,[৭] অথবা এমন কোন ডিজাইন টুল, যেখানে ব্যবহারকারীর উত্তরের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রদর্শন করা হয়।[৮][৯][১০]

ফাংশন

এক্সেল ২০১৬তে ৪৮৪টি ফাংশন রয়েছে। [১১] এ ৪৮৪টি ফাংশনের মধ্যে ৩৬০টি এক্সেল ২০১০-এই অন্তর্ভুক্ত ছিলো। মাইক্রোসফট এর ফাংশনসমূহকে ১৪টি শ্রেণিতে ভাগ করে। এর মধ্যে ৩৮৬টি ফাংশনকে ভিবিএ বা ভিজুয়াল বেসিক অ্যাপলিকেশন বলা হয়।

ম্যাক্রো প্রোগ্রামিং

এক্সেলে ব্যবহারকারী-কর্তৃক সংজ্ঞায়ীত ফাংশন sq(x)

এক্সেলে ব্যবহারকারী-কর্তৃক সংজ্ঞায়ীত ফাংশন sq(x)-এর ব্যবহার। নামক চলক “x” ও “y” “নেম ম্যানেজার”-এ চিহ্নিত করা হয়েছে। ফাংশন “sq” “ভিজুয়াল বেসিক” সম্পাদক ব্যবহার করে তৈরী করা হয়েছে।

এক্সেলের উইন্ডোজ সংস্করণ মাইক্রোসফটের ভিবিএর মাধ্যমে প্রোগ্রামিং সমর্থন করে, যেটি ভিজুয়াল বেসিকের একটি উপভাষা। ভিবিএ ব্যবহার করে প্রোগ্রামিং করে স্প্রেডশিটে এমন কিছু করা যায়, যা সাধারণভাবে করা দুরুহ বা একেবারেই অসম্ভব। প্রোগ্রামাররা ভিজুয়াল বেসিক সম্পাদক বা ভিবিই ব্যবহার করে সরাসরি কোড লিখতে পারে, যেখানে কোড লেখা ও ডিবাগের জন্য আলাদা একটা উইন্ডো থাকে। ব্যবহারকারী সংখ্যাসূচক পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারে, ডাটা সংগঠনের কাজে ব্যবহার করতে পারে কিংবা শুধু মাত্র ফরম্যাটিঙের কাজেও এটি ব্যবহার করতে পারে। ‌ ভিবিএ কোড তৈরীর একটি সহজ ও সাধারণ উপায় হলো ম্যাক্রো রেকর্ডার ব্যবহার।

চার্ট

এক্সেল ব্যবহার করে তৈরীকৃত গ্রাফ

এক্সেল ব্যবহার করে তৈরীকৃত গ্রাফ

নির্দিষ্ট করে দেয়া সেলসমূহ থেকে এক্সেল চার্ট, গ্রাফ অথবা হিস্টোগ্রাম তৈরী করতে সক্ষম। উদ্ভূত চিত্রলেখসমূহ বর্তমান শিটে গ্রত্থিত করা যায়, অথবা স্বকীয় অবজেক্ট হিশেবেও ব্যবহার করা যায়। সেলের উপাদানসমূহ পরিবর্তনের ফলে এ চিত্রলেখগুলোও স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তিত হয়।

অ্যাড-ইন

অ্যাডইন ব্যবহার করে এক্সেলে উপর্যুক্ত সুবিধাসমূহ ছাড়াও আরও বাড়তি সুবিধা যুক্ত করা যায়। কিছু অ্যাড-ইন এক্সেলে আগে থেকেই অন্তর্ভুক্ত থাকে:

  • অ্যানালাইসিস টুলপ্যাক: প্রকৌশল ও পরিসংখ্যান সম্পর্কিত বিশ্লেষণের জন্য ডাটা বিশ্লেষণ টুল (বৈকল্পিক বিশ্লেষণ ও প্রত্যাগতি বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে)
  • অ্যানালাইসিস টুলপ্যাক ভিবিএ: অ্যানালাইসিস টুলপ্যাকের জন্য ভিবিএ ফাংশন
  • সোলভার অ্যাড-ইন: সমীকরণ সমাধানরে টুল

ওয়েবের জন্য এক্সেল

এক্সেল একেবারের প্রথমদিককার অনেকগুলো স্প্রেডশিট প্রোগ্রামের থেকে কিছু ভিন্ন ব্যবহারকারী ইন্টারফেস টুইক প্রদান করে, তবে মূল বিষয়গুলো এখনও অই স্প্রেডশিট সফটওয়্যারগুলোর মতই রয়ে গেছে। যেমন ভিসিক্যলকপ্রোগ্রামের কথা ধরা যাক, এটা সেলগুলোকে রো এবং কলামে সাজিয়ে রাখতো, এবং প্রত্যাকটা সেল ডাটা বা ফরমুলা সংরক্ষণের ক্ষমতা রাখতো, আবার যেগুলো অ্যাবসল্যুট কিংবা রিলেটিভ রেফারেন্স ধারণ করতে সক্ষম ছিলো, যে বিষয়গুলো এখনও এক্সেলে রয়েছে।

উইন্ডোজের জন্য এক্সেল ২.০ যেটা ম্যাকের একইধরণের একটি প্রোগ্রামেরই অনুকরণ, উইন্ডেজের জনপ্রিয়তা বাড়াতে একটি মোক্ষম অস্ত্র হিশেবে কাজ করেছে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের একটি ডস সংস্করণ থাকলেও, মাইক্রসফট এক্সেলের ছিলো না।

এক্সেলই প্রথম কোন স্প্রেডশিট প্রোগ্রাম, যেটি ব্যবহারকারীকে স্প্রেডশিটের ফন্ট, ক্যারেক্টার অ্যাট্রিবিউট, সেলের রঙসহ বিভিন্ন কিছু পরিবর্তনের সুযোগ করে দেয়। ইন্টিলিজেন্ট সেল রিকম্পিউটেশন নামের একটি নতুন সুবিধাও এক্সেল চালু করে। অটোফিল নামের আরেকটি জনপ্রিয় স্প্রেডশিট বৈশিষ্ট্যও এক্সেল নিয়ে আসে।

নিরাপত্তা

এক্সেলের ব্যাপক জনপ্রিয়তার দরুণ, বিভিন্ন সময় এটি হ্যাকারদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। যদিও এক্সেল সরাসরি ইন্টারনেটে উন্মুক্ত নয়, তবে আক্রমনকারী ভুক্তভোগীকে যদি কোন ফাইল এক্সেলে খুলতে বাধ্য বা অনুপ্রাণিত করতে পারে এবং যদিও এক্সেলে একইধরণের কোন নিরপত্তা বাগ থাকে, তবে আক্রমনকারী ভুক্তভোগীর কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। [১২] যুক্তরাজ্যের জিসিএইচকিউর টর্নেডো এলি নামে একটি হাতিয়ারই রয়েছে এমন কাজের জন্য। [১৩][১৪]

ইতিহাস

ডেনিশ অস্টিন ও থমাস রুডকিন মাকিন্টোশ পিসির জন্য প্রথম একটি উপস্থাপনা প্রোগ্রাম তৈরি করেন,[২] ফরথট ইঙ্ক কম্পানির হয়ে।[৩] ১৯৮৭ সালে ট্রেডমার্কজনিত কারণে এর পুনঃনামকরন করা হয় পাওয়ারপয়েন্ট, নামটির ধারণা দেন রবার্ট গাস্কিন্স[৪] একই বছরের আগস্ট মাসে মাইক্রোসফট এটি ১৪ মিলিয়ন ডলারে কিনে নেয়। (বর্তমান বাজারমুল্যে ২৯.১ মিলিয়ন ডলার), এবং মাইক্রোসফটের প্রথম গ্রাফিকাল ব্যবসায়ী ইউনিট যাত্রা শুরু করে এবং সফটওয়্যারটির আরও উন্নতি শাধন করে। ২২ মে ১৯৯০, পাওয়ারপয়েন্ট আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে, একই দিনে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৩.০ মুক্তি দেয়।

ব্যবহারবিধি

মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট একটি প্রেজেন্টেশন প্রোগ্রাম। যেটা শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, উপস্থাপনা ও প্রচারমাধ্যম থেকে শুরু করে সকল প্রকার দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত হয়। কম্পিউটারে মাইক্রোসফট অফিস প্রোগ্রামটি ওপেন করলেই এই পাওয়ার পয়েন্ট অপশনের দেখা মিলবে। “MS Word” এর প্রতিটি ফাইলকে যেমন “Document” বলা হয়, তেমনি পাওয়ার পয়েন্টের ফাইল “Presentation” নামে পরিচিতি পাবে। তাছাড়া “MS Word” এ যেমন Page থাকে, পাওয়ার পয়েন্ট ঠিক তেমনি “Slide” থাকে। একটি স্লাইডে লেখা শেষ হলে “Ctrl+M” টিপলে পরবর্তী স্লাইড নেয়া যাবে। প্রতিটি স্লাইডের সাধারণ মাপ হচ্ছে ৩৫mm.

পাওয়ার পয়েন্টের প্রতিটি স্লাইডে বাক্সের আকারে দুটি অংশের দেখা মিলবে। উপরেরটিতে “Click to add title” লেখা থাকে, এখানে প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তুর শিরোনাম বা হেডলাইন লিখতে হয়। সেক্ষেত্রে অবশ্যই বড় আকারে আকর্ষণীয় ফন্টে শিরোনাম লিখতে হবে। আর নিচের অংশে লেখা থাকে “Click to add subtitle”, এখানে বিষয়বস্তুর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা প্যারাগ্রাফ আকারে বা বুলেট পয়েন্টের আকারে লিখতে হয় অথবা ছবি সংযোজন করতে হয়। প্রয়োজনভেদে এই অংশে শর্ট ভিডিও ক্লিপ অথবা অডিও ফাইল যোগ করা যায়। সেভ করার জন্যে প্রতিবার “Ctrl+S” টিপতে হবে।

পাওয়ার পয়েন্টের Ribbon অংশে কয়েকটি প্রয়োজনীয় অপশন রয়েছে। যথা-

  • HOME– এখানে লেখার ফন্ট স্টাইল, কালার ও সাইজ সেট করতে হয়। প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি বুলেট পয়েন্ট আকারে লেখার ব্যবস্থা এখানে পাওয়া যাবে।
  • INSERT– লেখার পাশাপাশি ছবি, ভিডিও, অডিও ফাইল, গ্রাফচিত্র এসব ব্যবহারের জন্যে এর প্রয়োজন হয়।
  • DESIGN– এখানে স্লাইডগুলির রঙ ও ডিজাইন সিলেক্ট করার প্রয়োজনীয় অপশন থাকে।
  • TRANSITIONS এবং ANIMATION– এই দুটি অপশনের কাজ প্রায় কাছাকাছি। স্লাইডগুলিকে নান্দনিকভাবে উপস্থাপনের জন্যে উপরোক্ত অপশনদুটির সাহায্যে অ্যানিমেশন অথবা ইফেক্ট সৃষ্টি করা যায়। যেমন-স্ক্রিনে কালো পর্দাটি সরে গিয়ে প্রথম স্লাইড দেখতে পাওয়া গেলো অথবা স্লাইডটি পাখির মতো বা প্লেনের মতো উড়ে গিয়ে পরবর্তী স্লাইড চলে এলো, আবার পরবর্তী স্লাইডটি ভেসে এসে আগের স্লাইডটিকে সরিয়ে দিলো… এমনই এসব নান্দনিক ইফেক্ট এখানে তৈরি করা সম্ভব।

প্রেজেন্টেশন তৈরির সমস্ত কাজটি শেষ হবার পর ধাপে ধাপে পরবর্তী স্লাইড দেখার জন্যে Right navigation key টিপতে হবে। অথবা কীবোর্ডের F5 টিপলে Auto slide show শুরু হবে, শেষ হলে Esc টিপতে হবে।

আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়ার পয়েন্ট প্রদর্শনের জন্যে কম্পিউটারের সাথে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ, প্রোজেক্টর, সাদা পর্দা এবং সাউন্ড সিস্টেমের প্রয়োজন হবে। তার পাশাপাশি একজন দক্ষ বক্তা-যার সরস সাবলীল ও নির্ভীক বাচনভঙ্গি এবং উপস্থাপনা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।